বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ রচনা | মহান মুক্তিযুদ্ধ রচনা
বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ রচনা
ভূমিকা
বাঙালি জাতি পরাধীন ছিল কিন্তু পরাধীনতা মেনে নেয়নি। তারা যুগ যুগ ধরে যুদ্ধ করেছেন, লালন করেছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। ১৭৫৭ সালে বাংলার স্বাধীনতার পর ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে বাঙালির সংগ্রাম অবিস্মরণীয়। ইংরেজদের বিদায়ের পর পাকিস্তান রাষ্ট্রের পতনের পর শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক নীতির কারণে বাংলার মুক্তিকামী মানুষ অনিবার্য যুদ্ধের দিকে অগ্রসর হয়।মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্ব
১৯৪৭ সালে স্বাধীন পাকিস্তান বাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয় দ্বি-জাতিতত্বের বিষবৃক্ষের ওপর ভিত্তি করে। পশ্চিম পাকিসতানি শাসকগোষ্ঠীর নির্লজ্জ বৈষম্যনীতির প্রকাশ ঘটে যখন তারা উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। বাংলার মানুষ মাতৃভাষার সম্মান রক্ষার্থে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য বাংলার দামাল সন্তানেরা অকাতরে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর পদলেহী রাষ্ট্রীয় উর্দিধারী পুলিশের গুলিতে প্রাণ দেয়। ভাষাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে অভূতপূর্ব জাতীয়তাবাদী চেতনার জন্ম হয়। প্রকৃতপক্ষে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনই বাঙালি জাতির মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে শাণিত করে তোলে।মুক্তিযুদ্ধের পথ-পরিক্রমা
ভাষা আন্দোলনের যলে যে জাতীয়তাবাদী চেতনার সফুরণ ঘটে তার আলোকেই জাতির মানসচক্ষুতে ভেসে উঠে শাসকগোষ্ঠীর বিভিন্ন বৈষম্যনীতি। সাময়িক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যের বিরুদ্ধে গোটা জাতি প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠে। এ সময় আওয়ামী লীগ জনগণের আশা-আকারদার প্রতীক হিসেবে সাংগঠনিক প্লাটফরমরূপে আবির্ভূত হয়।মাওলানা ভাসানী, বজাবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রমুখের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে জাতি পরিপূর্ণ স্বাধীনতার জন্য উন্মাতাল হয়ে উঠে। ঐতিহাসিক ৬ দফা ও ১১ সঞ্চার সূত্র ধরে জাতীয় জীবনে সশসত্র সংগ্রামের চেতনা পরিণতির দিকে ধাবিত হয়। অবশেষে ১৯৭০ খালের নির্বাচন এলো। বাঙালি তার স্বাধিকার চেতনার অনুষ্ঠ প্রকাশ ঘটান আওয়ামী লীগকে নিরজনূশভাবে বিজয়ী করার মাধ্যমে।
সশসত্র সংগ্রামের সূচনা
নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের হাতে যখন ক্ষমতা অর্ণবে শ্যাষকগোত্রী গড়িমবি করতে লাগল তখন বক্তাবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোনালেন স্বাধীনতার অবিমরণীয় ফেলা। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তিনি ঐতিহাসিক দেশকোর্স ময়দানে উত্তাল জনসমুদ্রের সামনে ঘোষণা করলেন, 'এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। ২৫ মার্চ কালো রাত্রিকে পাকিস্তানি হায়েনার দল বায়দির ওপর খাঁপিয়ে পড়ল হরুনেশার উল্লাস নিয়ে। বন্দি হয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে বাওয়ার আগে বক্তাবন্ধু গোটা জাতিকে স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত সশর যুদ্ধে অবতীর্ণ হবার আহবান জানালেন। মুক্তিশ্বের চেতনায় উদ্বুদ্ধ জাতি ঝাঁপিয়ে পড়ল সশসত্র সংগ্রামে।অবশেষে বিজয়
দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে এবং ৩০ লাখ বাঙালির জীবন দানের বিনিময়ে বাংলার মানুষ ছিনিয়ে আনল স্বাধীনতা। পশ্চিম পাকিস্তানি হায়েনার দল আত্মসমর্পণ করল। পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামক একটি নতুন স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের পত্তন হলো। মুক্তির যে চেতনা বাঙালির হৃদয়তলে দীর্ঘদিন বয়ে চলেছিল তা স্বাধীনতার মিলন-মোহনায় এসে শতধারায় উৎসারিত হলো।জাতীয় জীবনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল একটি শোষণমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে মানুষের পরিপূর্ণ বিকাশের দাবি নিয়ে। অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে স্বনির্ভর বাংলাদেশে সত্য-সুন্দর-কল্যাণ ও মানবিকতাপূর্ণ একটি গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণই ছিল মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন।দেশকে সার্বিকভাবে উন্নয়ন ও অগ্রগতি, গণতন্ত্র ও সাম্যের পথে নেয়ার জন্য জাতীয় চেতনার লালনই প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। জাতীয় জীবনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিকশিত করা আজকের সময়ের দাবি। কেননা বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরও দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জিত হয় নি। অসাম্প্রদায়িকতা, সাম্য সমাজে আজ অনুপস্থিত। দেশে যথাযথভাবে গণতন্ত্রের বিকাশও হচ্ছে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাস্তব রূপদানের মধ্য দিয়েই আমরা আগামী দিনের বাংলাদেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারব।
উপসংহার
সমগ্র জাতিকে কল্যাণের পথে পরিচালিত করার মাধ্যমেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন ও বিকাশ সম্ভব। এজন্য দেশের প্রতিটি নাগরিকের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। তাই কবি রফিক আজাদের কণ্ঠে আমরাও বলতে চাই- ‘বাংলার স্বাধীনতা প্রায়োগিক বীরত্ব নয় হীনতা বাঙালি স্বাধীন চেতা মনোভাব প্রতিবাদ অন্যায়ের বিরুদ্ধে জানানো স্বভাব’।TAG: বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধ রচনা,বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা,মুক্তিযুদ্ধ রচনা,বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ রচনা,বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ রচনা,বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ রচনা,মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৪র্থ শ্রেণি,বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা hsc,বাংলা দেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা,মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৫ম শ্রেণি,বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ssc,মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০ পয়েন্ট।
